আজ বৃহস্পতিবার, ১৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভারতে উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি ,কংগ্রেসের জয়

বিজেপির ভরাডুবি

ভারতে উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি ,কংগ্রেসের জয় বিজেপির ভরাডুবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতের রাজস্থানে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে তিনটি আসনেই পরাজিত হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। আজমের, আলওয়ার ও মণ্ডলগড় আসন এখন কংগ্রেসের দখলে। এই পরাজয় বিজেপির জন্য বড় একটি ধাক্কা।

গত ২৯ জানুয়ারি রাজস্থানের পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। আলওয়ার কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী যশোবন্ত যাদবের চেয়ে ৪৮ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী করণ সিং।

আজমের কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী রাম স্বরূপ লাম্বার বিরুদ্ধে ১ লাখ ৪৪ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন রঘু শর্মা।

মণ্ডলগড় কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শক্তি সিংহকে ১১ হাজার ১৩৬ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী বিবেক ধকড়। হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি অবলম্বনে

কেন বিজেপির এমন ভরাডুবি? আর কংগ্রেসই বা কোন কৌশলে জয়ী হলো?

সাধারণত উপনির্বাচনে ভোটাররা রাজ্য ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ছাড়া আর কাউকে ভোট দেন না। কারণ তাঁরা মনে করেন, অন্য কোনো দলের নির্বাচিত প্রার্থী জনগণের জন্য খুব বেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন না। কিন্তু রাজস্থান নির্বাচনে এবার ব্যতিক্রম ঘটেছে। মানুষ ভোট দিয়েছেন কংগ্রেসকে।

উপনির্বাচনের প্রচারের সময় থেকেই বিজেপি কোণঠাসা হওয়ার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। আলওয়ার ও আজমের রাজস্থান কংগ্রেসের প্রধান সচিন পাইলট ব্যাপক প্রচার চালান। বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার ফাঁদে পা না দিয়ে প্রচারকালে সরকারের ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করে কংগ্রেস। জোর দেয় উন্নয়নের দিকে। জাতপাত নিয়ে জনগণের অনুভূতির দিকেও কংগ্রেসের ছিল কড়া নজর। সেই সঙ্গে তরুণ নেতৃত্বের কথা মাথায় রেখেছে কংগ্রেস।

অন্যদিকে বিজেপি চেষ্টা করেছে সাম্প্রদায়িকতার উসকানি দিয়ে মানুষকে কাছে টানতে। ‘পদ্মাবত’ বিতর্কে নীরব থেকে রাজপুতদের সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করেছে। এমনকি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে রোড শোও করেছিলেন। কিন্তু এগুলোর কোনোটাই কাজে আসেনি।

বিজেপি অবশ্য এই হারের ব্যাখ্যা বিভিন্নভাবে করছে। তাঁরা বলছে, অজমেরে রাজপুতদের অসন্তোষের খেসারত দিতে হয়েছে দলকে। আলবার আসনে হারের কারণ হিসেবে ভুল প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে বলছেন, উপনির্বাচনের ফল দিয়ে গোটা রাজ্যের বিচার হয় না।

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের ভাবমূর্তিও হারের একটি কারণ হতে পারে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস) মনে করে বসুন্ধরা রাজের জনপ্রিয়তা নেই। তাঁকে বদলানোর সময় এসেছে।

ভারতে বাজেটের দিনে বিজেপির পরাজয়কে বিশেষভাবে বিবেচনা করছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করেন, ‘ওয়েল ডান রাজস্থান কংগ্রেস’। রাজস্থান কংগ্রেসের প্রধান সচিন পাইলট মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের পদত্যাগ দাবি করেন।

কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন নেতা মনে করছেন, ভারতে জনসমর্থন কমছে, এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোট এগিয়ে আনতে চাইছেন। বাজেটের মাধ্যমে নতুন করে চাঙা করে তুলতে চাইছেন সবাইকে।

কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, ‘হারের ভয়েই কি বিজেপির দোসর নির্বাচন কমিশন বাজেটের দিন ফল ঘোষণার দিন স্থির করেছিল? যাতে বাজেট ঘোষণায় পরাজয় ঢেকে যায়!’